সাইবার সিকিউরিটি আইনের মামলা প্রত্যাহার ও বিচারক নিয়োগে পরিবর্তন
- By Jamini Roy --
- 21 January, 2025
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন, সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে সারা দেশে যে সব মামলা রয়েছে, সেগুলি প্রত্যাহার করা হবে। এ ছাড়া, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক এবং গায়েবি মামলাগুলোও ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আসিফ নজরুল জানান, সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে চলমান সব মামলা আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে। একই সঙ্গে, এই আইন সংস্কারের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, “দেশে এই আইনের প্রয়োগে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা সমাধান করতে হবে।”
এছাড়া, তিনি ২৫টি জেলার আড়াই হাজার রাজনৈতিক, হয়রানিমূলক ও গায়েবি মামলা চিহ্নিত করেছেন, যেখানে লাখ লাখ মানুষ আসামি। এসব মামলাগুলি ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে এবং প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি জানান, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, “এই মামলাগুলোতে সাধারণত বিস্ফোরক আইন, অস্ত্র আইন, পুলিশের ওপর হামলা, এবং বিরোধী দলের বড় সমাবেশের আগে-পরে তৈরি করা মামলা বেশি ছিল। আমরা এসব মামলার প্রবণতা বিশ্লেষণ করে সেগুলি চিহ্নিত করেছি।”
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আরও জানান, উচ্চ আদালতে বিচারকদের নিয়োগের পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। এর আগে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিচারক নিয়োগের অভিযোগ ছিল, তবে এখন থেকে বিচারক নিয়োগ দক্ষতার ভিত্তিতে এবং দল নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে করা হবে।
তিনি বলেন, “বিচারকদের নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ-২০২৫ গেজেট নোটিফিকেশন হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া আরো স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ হবে।”
এছাড়া, তিনি জানান, সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠন করা হবে, যা ছয় সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি হবে। এই কমিটি বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া তদারকি করবে।
আসিফ নজরুল জানান, সাইবার সিকিউরিটি আইন এবং অন্যান্য বিতর্কিত আইনগুলোতে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হলো, একটি সুষ্ঠু ও কার্যকর আইন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ এবং বিচারিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও বলেন, "বর্তমান সরকার আইন সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চায়, যাতে বিচার ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।"